ওটা (চরম হাসির গল্প)


বাসর রাতে জানতে পারলাম আমার বউ তরীর একটা দোষ আছে। জিনিসের নাম মনে না আসলে ‘ওটা’ শব্দটা ব্যবহার করে। স্মরণ শক্তি কম হলে, তেমন'টা মানুষের হয়ে থাকে। তার ‘ওটা’ শব্দের জন্য, আমার জীবন ছারখার হওয়ার অবস্থা।


সে আমাকে ফুলসজ্জার রাতে বললো,“শাওন, তোমার ‘ওটা’ খুব সুন্দর!”


আমি চোখ বড় করে রাখলাম। তাকে আমি আবার কখন ‘ওটা’ দেখালাম। মেয়ে দেখছি ভেরি ফাস্ট। চিন্তা করেই, ছবি এঁকে ফেলেছে মনে।


আমি লজ্জা পেয়ে বললাম,“না মানে ইয়ে যতটা সুন্দর ভাবছো, ততটা না। দেখলেই বুঝতে পারবে।”


তরী বললো,“তোমার ‘ওটা’ তো আমার চোখের সামনেই। খুব ছোট।”


আমি ভয় পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম, প্যান্ট ছিঁড়া কিনা। হাত দিয়ে দেখলাম, না ঠাণ্ডা লাগছে না। তার মানে প্যান্ট তো ঠিক আছে। কীভাবে বুঝলো ছোট? 


সে কি এরকম আরও দেখেছে?

আমি গরম হয়ে বললাম,“তুমি কীভাবে জানো ওটা ছোট? তুমি কী কয়েক'টা মেপে দেখেছো নাকি?”


এবার সে কান্নাভাব বললো,“দেখলে সমস্যা কোথায়?

ওটাতো সবাই দেখে!”


- কী বলো? সবাই দেখে?

- আমার এক বান্ধবী তমারও ওটা ছিলো। আমরা ধরে ধরে দেখতাম।


আমার মাথা চক্কর দিচ্ছে। এই মেয়ে কী বলে! পুরুষ মানুষের ওটা আবার মেয়েদের কীভাবে থাকে?

আবার সেটা নাকি ধরে ধরে দেখতো!!

এই আমি কাকে বিয়ে করলাম?


আমি কান্না ভাব নিয়ে বললাম,

- কী বলো?

আমি তো বাসর রাতে শহীদ হয়ে যাবো। ওটা কেউ ধরে নাকি?


- আরে, আমি গালের তিলের কথা বলছি।

- গালের তিল? ( আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম)

- না হলে, তুমি কী ভেবেছো??


- হা হা হা। আমিও না। তুমি বুঝবে না।

কিন্তু একটু পরে যখন তরী'কে আদর করতে লাগলাম, তখন সে ছাড়িয়ে আমতা আমতা করে বললো,“আমি তো আমার ‘ওটা’ আমার রুমে রেখে এসেছি। এখন কীভাবে হবে!”


আমি তো ভয়ে ঢুক গিলতে থাকলাম। ‘ওটা’ যে কেউ রেখে আসে সেটা আজ জানলাম। এবার কান্না মাখা চোখে জিজ্ঞাসা করলাম,“কি রেখে এসেছো?”


- না মানে, ওটা আরকি! যেটা দিয়ে ওটা করে!

আমি কাঁদতে লাগলাম। হায়রে ওটা যে ঘরে কেউ রেখে আসে, সেটা আমি প্রথম জানলাম। তাই চোখ বেয়ে কান্না পড়ছে। বাসর রাতে তো আনা উচিত ছিলো।

কিন্তু সে কিছুক্ষণ পরে বললো,“তুমি কাঁদছো কেন?

আরে লম্বা ওইটা আর কি?”


আমি তো মাথার চুল ছিঁড়তে থাকলাম।

কিন্তু তরী আমাকে বললো,“ও মনে পড়েছে।

আরে! মোবাইলের কথা বলছি।”


কথাটা শুনে আমার বুকে হাত দিয়ে ধরে থাকলাম। বুকে পানি এলো। আরেকটু হলে সংবাদপত্রের হেডলাইন হয়ে যেতাম।


যাক, তরী যেটা বাসায় রেখে এসেছে ভেবেছিলাম, সেটা না।


এই মেয়ের ‘ওটা-সেটা’ বলার জন্য আমার জীবন-জিন্দেগী তামা-তামা হয়ে যাচ্ছে। ওইদিন আব্বাকেও বলে বসলো,

- আব্বা! আপনার ওটাতো বাঁকা!


আব্বা, ভয়ে চুপসে গেছে। ঢুক গিলছেন। কিন্তু, তরী আবার বললো,

- আপনার ওটা'কে আমার শাশুড়ি আম্মা কীভাবে যে বড় করেছে, সেটা আমি বুঝিনা।

বাবা, দেখছি বুকে হাত দিয়ে আছে। মুখে সাদা ফেনা বের হচ্ছে।


আমি তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে বললাম,

- বাবা! তুমি যেটা ভাবছো, ওইটা সেটা না। এটা অন্য ওটা।


আমি তাড়াতাড়ি তরী'কে বললাম,“তাড়াতাড়ি নামটা বলে দাও, নইলে আব্বা মারা যাবেন!”

তরী আমতা-আমতা করে বললো,‘চ’ দিয়ে শুরু ওইটা আরকি। আব্বা, এবার মেঝেতে শুয়ে গেছে।


‘চ’ দিয়ে কি নাম ভেবেছেন, আল্লাহই ভালো জানেন। পা গুলো মৃগীরোগীর মতো বারি দিচ্ছে।

কিন্তু তরী বললো, ছোট ‘চ’ না, বড় ‘ছ’ দিয়ে শুরু। 


এবার আমি বুঝে বললাম,“ছেলে?”

সে বললো,“ হ্যাঁ। আপনার ছেলেটা বড়ই বাঁকা। যেটা বুঝে, সেটা করে। শাশুড়ি আম্মা আপনার ছেলেকে বড় করেছে কীভাবে! বুঝিনা আমি।”


আব্বা, নিজে নিজে ঠিক হয়ে চলতে শুরু করলেন।

বড় খালুকেও হাসপাতালে পাঠালো, ওটা বলার জন্য।

বড় খালু আসলে, তরী সালাম করে বললো,“খালু! আপনি আমাকে আপনার ওটা দিয়ে দুয়া করেন! যেটা আপনার লম্বা!”


বড় খালা থতমত খেয়ে গেলেন, মনে হচ্ছে বড় কোন ভূমিকম্প হয়ে গেছে। হয়তো ভাবছেন,‘ওটা’ দিয়ে কীভাবে দুয়া করে??


ওমা! উনি দেখি, ওটা দিয়ে দুয়া করার কথা চিন্তা করে, দাঁড়িয়ে হার্ট এটাক করেছেন। সে দাঁড়ানো অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। এমনকি দাঁড়ানো অবস্থায় তাকে স্যালাইন সহ চিকিৎসা দেওয়া হলো।


পরে বুঝলাম, তরী বলেছে ওটা মানে হাতের কথা।


তরী'কে নিয়ে বড্ড বিপদে পড়ে গেলাম। তার রুপ দেখে, কাবিন নামায় ২০ লাখ টাকা লিখিয়ে, এখন তাকে তালাকও দিতে পারছি না। আবার সইতেও পারছি না।


ওইদিন তার কারণে বস এরও তালাক হয়ে গেলো। বিয়ে উপলক্ষে অফিসের সবাইকে দাওয়াত করেছিলাম। অফিসের বস তার বউ নিয়ে আসলেন। আমার বউ'কে দেখে দুষ্টুমি করে বললো,“বাঃ! শাওনের বউ তো অনেক সুন্দর। অনেক ভাগ্যবতী সে। আমি কেন পেলাম না আফসোস হচ্ছে।”


তখন, তরী লজ্জা করে বললো,“স্যার! আপনার ওটা দেখছি কাঁটা।”


স্যার আর স্যারের বউ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। যেনো কোন কিছুর সাথে মিলে গেছে। স্যারের বউ, তাকে কলার ধরে নিয়ে গেলেন বাসায়। ওটা কাঁটা যে কীভাবে জানলো তরী??

নিশ্চয়ই দেখিয়েছেন স্যার।


পরে শুনি, স্যার'কে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে তালাক দিয়ে দিয়েছেন। স্যারের সে কি কান্না!

আমি স্যার'কে দেখতে গিয়ে বললাম,“আপনি যেটা ভেবেছেন সেটা না। এটা ঠোঁট কাঁটা থাকার কথা বলেছে।” স্যার, দেখি ঘুমিয়ে গেছেন। নিঃশ্বাস চলছে না।

আমি এবার বাসায় এসে তরী'কে নিয়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে। ওষুধ খেলে তার ওটা ভালো হয় কিনা কে জানে?


ডাক্তার সাহেবের চেম্বারে গেলে, ডাক্তার সাহেব বললেন, “কী সমস্যা মা!”

তরী বললো,“আমার ওটার সমস্যা। আমি কথায় কথায় ওটা বলি। এতে আমার কি দোষ! ওটা কোনো সমস্যা, স্যার??

আপনি কি ওটার চিকিৎসক যে, ওটা ঠিক করে দিবেন?? আপনারও তো মাঝে মাঝে ওটা চলে আসে। কিন্তু আপনি তো সময় নিয়ে ওটার কথা বলে দেন!”


ডাক্তার চেম্বারে কাঁত হয়ে আছেন। রোগীর কথা শুনে ডাক্তার নিজেই শেষ। কেউ দেখার আগেই পালিয়ে চলে এলাম।


এভাবে হলে, পুরো এলাকা তরী কবরে ঢুকিয়ে দিবে। তাই জায়গা বিক্রি করে, টাকা জোগাড় করলাম। পরেরদিন, সকাল হলে ডিভোর্স দিয়ে দিবো। সেদিন ঘরে আমি আর তরী ছাড়া আর কেউ ছিলো না।


হঠাৎ পাশের ফ্ল্যাটে চিৎকারের শব্দ শুনে ছুটে গেলাম। গিয়ে দেখি, বাড়ির মালিক'কে কেউ একজন ছু*রি মেরে পালিয়েছে। আমি ছু*রি'টা বের করার সময়, তখন সে সময় পুলিশ এলে, আমাকে খুনি ভেবে ধরে নিয়ে গেলো। তরী আমাকে চিন্তা করতে নিষেধ করলো।


কিছুদিন পর, আদালতে আমি। আমার বিপরীতে সাক্ষী প্রমাণ বিপক্ষে গেলো। নিশ্চিত আমি খুনি।

কিন্তু, তখন প্রধান সাক্ষী ‘তরী’ কাঠগড়ায় এলো।


জজ সাহেব বললেন,“মা! তুমি যা দেখেছো, তা সত্যি বলো!”


বাদী পক্ষের আইনজীবি বললেন,“আপনি কি খুন দেখেছেন?”


তরী বললো,“হ্যাঁ! আমি ছিলাম!”


-- তাহলে, সব খুলে বলুন।


-- আমি আর শাওন ওটার উপরে শুয়ে ছিলাম। ঘুম আসছিলো না, তাই দুজনে ওটা করছিলাম। হঠাৎ কারও চিৎকার। শাওন আমাকে ওটার উপর রেখে, বেরিয়ে যায়। আমিও আস্তে আস্তে দেখি বাড়ির মালিকের পেটে ওটা। মালিকের ওটা নড়তে ছিলো। 


আমার হাজবেন্ড মানে আজিজুল হক শাওন যখন, তার ওটা হাত দিয়ে নিয়ে নিলো, তখন বাড়ির মালিক ‘আহ’ করে মারা গেলো। আর তখন আপনারা এলেন। আর শাওন'কে ওটা সহ দেখে, অপরাধী ভাবলেন। আমি জজ সাহেবের ওটার কছম খেয়ে বলছি, আমার হাজবেন্ড নির্দোষ। প্লিজ জজ সাহেব, আপনার যদি একটুও ওটা থাকে তাহলে আমার হাজবেন্ডকে ছেড়ে দিন। আমার কাছে ওটা আছে। আমি এখনই বের করছি, সবার সামনে।


পুরো আদালত তরীর ওটা বের করার কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে গেছে। আসলে, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের ক্যাসেট বের করছিলো।


জজ সাহেব, এই প্রথম রায় দেয়ার আগেই মারা গেলো।

তরীর ওটার জন্য বেঁচে গেছি। এখন থানা, পুলিশ আমাকে দেখলেই ভয়ে দূরে চলে যায়। তরী'কে আর ডিভোর্স দিইনি। তার ওটা শব্দটার জন্যই আমার আবার ওটা পেলাম।


আপনার ওটা মানে (মন্তব্যটা) বলে যাবেন।

Comments